সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার GBP/USD পেয়ারের উল্লেখযোগ্য দরপতন হয়েছে। যে পাউন্ড দীর্ঘ সময় ধরে ডলারের বিপরীতে স্থিরভাবে শক্তিশালী হচ্ছিল, হঠাৎ করে কেন এত বড় দরপতনের শিকার হল, তা বোঝা কঠিন। যুক্তরাজ্য থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে লন্ডনের অবস্থান তুলনামূলকভাবে নমনীয়ই মনে হয়েছে। তবে, আমরা আগেই বলেছি—বর্তমানে মার্কেটের মুভমেন্টে কোনো যৌক্তিকতা নেই। আতঙ্ক এখন মার্কেটকে নিয়ন্ত্রণ করছে এবং এটি আরও কিছুদিন স্থায়ী হতে পারে।
শুধু গতকালই একাধিক সংবাদ শিরোনাম সামনে আসে: চীন পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত সকল পণ্যের ওপর 25% শুল্ক আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছে, এবং ট্রাম্প জানিয়েছেন যে যারা তার নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে, তাদের ওপর আরও শুল্ক আরোপ করা হবে। ফলে মার্কেটে মূল্যের দিক পরিবর্তনের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এই মুভমেন্টগুলোর কোনো স্পষ্ট প্যাটার্ন নেই।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বিগত কয়েকদিন ধরে অত্যন্ত উচ্চ মাত্রার অস্থিরতার কারণে সোমবার 5 মিনিটের টাইমফ্রেমে অনেকগুলো ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই, এই পেয়ারের মূল্য দিনের মধ্যে একাধিকবার বিভিন্ন লেভেল টেস্ট করার সুযোগ পেয়েছে। মূল দরপতন শুরু হয় 1.2913 লেভেল থেকে, যদিও মৌলিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই মুভমেন্ট অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। 1.2848–1.2860 এরিয়ার আশেপাশে কার্যকর সেল সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল। 1.2791–1.2798 জোন ব্রেক হওয়ার পর শর্ট পজিশন ওপেন করাও সম্ভব ছিল।
নতুন ট্রেডারদের মনে করিয়ে দিতে চাই, বর্তমানে মার্কেটে খুবই শক্তিশালী এবং দ্রুতগতির মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা ট্রেডিংকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
1 ঘণ্টার টাইমফ্রেমে অনেক আগেই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হওয়া উচিত ছিল তবে ট্রাম্প এখনও ডলারকে দুর্বল করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমরা এখন আর দীর্ঘমেয়াদি দিকনির্দেশনার পূর্বাভাস দেওয়ার চেষ্টা করছি না। শুক্রবার এই পেয়ারের বড় ধরনের দরপতন দেখা গেছে, যা একটি উল্লেখযোগ্য কারেকশনের সূচনা হতে পারে। তবে মার্কেটের ট্রেডাররা এখনও ট্রাম্প এবং তার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল হয়ে আছেন। যদি বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হয়, তাহলে মার্কিন ডলার নতুন করে বড় ধরনের দরপতনের শিকার হলে সেটি একেবারে অস্বাভাবিক কিছু হবে না।
মঙ্গলবার GBP/USD পেয়ারে্র মূল্যের অস্থিরতা অব্যাহত থাকতে পারে। আজ পাউন্ড এবং ডলারের মূল্যের প্রবণতা কেমন হবে তা অনুমান করাই প্রায় অসম্ভব। মার্কেটে অত্যন্ত শক্তিশালী এবং এলোমেলো মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে। একমাত্র উপায় হলো 5 মিনিট টাইমফ্রেমে লেভেল ধরে ট্রেড করা—তাও অবশ্যই ব্যাপক সতর্কতার সঙ্গে ট্রেড করতে হবে।
মঙ্গলবার 5 মিনিট টাইমফ্রেমে দৈনিক ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.2502–1.2508, 1.2547, 1.2613, 1.2680–1.2685, 1.2723, 1.2791–1.2798, 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3145–1.3167, 1.3225, 1.3272।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্র—কোনো দিক থেকেই কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে দিনের বেলা গুরুত্বপূর্ণ কোনো ইভেন্ট ঘটার সম্ভাবনা থেকে যায়। এই পেয়ারের মূল্যের অস্থিরতার মাত্রা সম্ভবত উচ্চই থাকবে, এবং মার্কেটেও বিশৃঙ্খল মুভমেন্ট দেখা যাবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।